দেশে করোনা আতঙ্কের কারণে বিএনপির চেয়ারপার্সপ্ন খালেদা জিয়ার মুক্তির ঘোষণা দিয়েছে সরকার। আগামি ৬ মাস তিনি ঘরে থাকবেন। তবে বিদেশ যেতে পারবেন না তিনি। এদিকে খালেদা জিয়ার মুক্তিতে বিএনপি নেতাদের মধ্যেস্বস্তি দেখা গেছে। কিন্তু একইসাথে তাদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্কও দেখা গেছে।
খালেদা জিয়ার মুক্তির সিদ্ধান্ত জানার পর গত মঙ্গলবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও শারীরিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, নেত্রীর মুক্তিতে তাদের মুখে হাসি দেখা গেছে।
কিন্তু একইসাথে নেতারা কিছুটা উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগে ভুগছেন। উদ্বেগের কারণ হিসেবে জানায়, মূলত বৈশ্বিক প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের সময় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিএনপি। স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন – খালেদা জিয়ার মুক্তিতে আমরা কিছুটা আবেগ-আপ্লুত তো বটেই, কিছুটা স্বস্তিও বোধ করছি। আবার আমরা কিছুটা আতঙ্কিত বোধ করছি। এই ভয়ঙ্কর সময়ে তার এই মুক্তি, তার কোনো ক্ষতি না ঘটে।
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মির্জা ফখরুলসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে লন্ডন থেকে স্কাইপে যুক্ত হন তারেক রহমান। মুক্তির পর কোথায় নেয়া হবে, তা নিয়ে নেতারা মতামত দেন। তবে এ বিষয়টি পুরোপুরি পরিবারের সদস্য ও চেয়ারপারসনের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দেন তারা।
বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন – আমরা তার মুক্তির জন্য আন্দোলন করেছি, আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করেছি। দেশনেত্রীর পরিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য তার সাময়িক মুক্তির জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তার মুক্তির ক্ষেত্রে দুটি শর্ত দেয়া হয়েছে। তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। এটি আমাদের কাছে ঠিক বোধগম্য নয়। কারণ পরিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য আবেদন করেছেন।’
তিনি বলেন – যাই হোক, দেশের মানুষ এবং বিএনপির নেতাকর্মীরা আজকে স্বস্তিবোধ করছেন। দীর্ঘকাল পর আজ খালেদা জিয়া আইনগতভাবে, সাংবিধানিকভাবে তার যেটি প্রাপ্য, সেই মুক্তি তিনি পেয়েছেন। আমরা আশা করি, ঠিক সময়েই কারাগার থেকে বেরোতে পারবেন। জনগণ ও নেতাকর্মীদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য।
আজ মুক্তি পাচ্ছে- এ জন্য আপনারা আবেগাপ্লুত হবেন। তাকে একনজর দেখার জন্য কাছে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। কিন্তু আজ সমগ্র বিশ্বে যে ভয়ঙ্কর মহামারী করোনাভাইরাস, যাতে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে। লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। বেশিরভাগ দেশ লকডাউন করা হয়েছে। বিলম্বে হলেও বাংলাদেশে কিছু ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তবে লকডাউন করা হয়নি।
তার মতে, এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়া যদি বেরিয়ে আসেন, নেতাকর্মীরা আবেগের বশবর্তী না হয়ে সবার নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে শান্ত থাকতে হবে, দূরে থাকতে হবে। বিএসএমএমইউ হাসপাতালের সামনে ও ম্যাডামের বাসভবনের সামনে ভিড় করবেন না। আলাদাভাবে থাকার বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন – আগে থেকেই খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তাকে দেখছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। কীভাবে বাসায় চিকিৎসা শুরু করা যায়, সেটিও আমরা ব্যবস্থা রাখছি। তবে ম্যাডামের সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করবে তিনি কি হাপাতালে চিকিৎসা নেবেন, না বাসায় চিকিৎসা নেবেন।
দিনের ব্রেকিং নিউজ সবার আগে পেতে আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন:
সরকারি এবং বেসরকারি চাকুরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পেতে
পাঠকের মতামত